ফ্রি লিড ম্যাগনেট ফানেল গাইড: ২০৩০ এর মার্কেটিং
লিড ম্যাগনেট বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সফল মার্কেটিং এর স্ট্র্যাটেজি গুলোর একটি। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে, বাংলাদেশে লিড ম্যাগনেটের ব্যবহার খুবই কম!
এ কারণেই, আমাদের এই ব্লগ, যেখানে আপনি লিড ম্যাগনেট কী, কিভাবে লিখবেন, এবং কিভাবে প্রোমোট করবেন, তা সম্পর্কে আমরা বেশ বিস্তারিত লিখছি।
তবে চলুন, শুরু করা যাক!
লিড ম্যাগনেট কী?
এক কথায়, লিড ম্যাগনেট হল এমন একটি রিসোর্স, যা আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কে দিয়ে দেবেন, এবং এর বিনিময়ে সে আপনাকে তার পার্সোনাল ইনফরমেশন (নাম, ইমেইল, কিংবা ফোন নাম্বার) দিবে। লিড ম্যাগনেট দেয়া হয় সাধারণত এই ইনফরমেশন এর জন্যই, যেন এদেরকে আপনি ভবিষ্যতে আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস দিতে পারেন।
সাধারণত, চার রকমের লিড ম্যাগনেট দেখতে পাওয়া যায় যেকোন মডার্ন বিজনেস কিংবা ব্লগে:
- ইবুক কিংবা হোয়াইটপেপার: কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে ইবুক লেখা বা সাজানো হয়।
- টেমপ্লেট এবং চেকলিস্ট: কিছু লিস্ট, যা আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের সময় এবং এফোর্ট বাঁচাবে।
- ফ্রি ট্রেনিং: ফ্রি ট্রেনিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রসপেক্ট দেরকে আপনার দক্ষতা দেখাতে পারবেন এবং একই সাথে তাদের সঙ্গে ভালোভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।
- ডিসকাউন্ট: ডিসকাউন্ট আপনার প্রসপেক্ট কে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেনার জন্য আগ্রহী করে তুলবে। বাংলাদেশে ডিসকাউন্ট মার্কেটিং এর প্রয়োগ অনেক বেশি, কাজেই এটা আপনার জন্য ভালো স্ট্র্যাটেজি হতে পারে।
লিড ম্যাগনেট ফানেল কী?
মার্কেটিং এ ফানেল হল এমন একটি সিস্টেম, যেখানে আপনার প্রসপেক্ট রা ঢুকবে, এবং তাদেরকে আপনি এই সিস্টেমে বিভিন্নভাবে নার্চার করবেন এবং তাদেরকে প্রোমোশন করবে, যেন তারা ফানেলের অন্যপাশ দিয়ে আপনার কাস্টোমার হিসেবে বের হতে পারে।
এই গাইডে, আমরা এই ফানেল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যেন আপনি একটি লিড ম্যাগনেট ফানেল নিজে তৈরি করতে পারেন, এবং সঠিকভাবে ম্যানেজ করে আপনার নিজের ব্যবসায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
কাজেই, চলুন আমরা প্রথম স্টেপ থেকে শুরু করি:
স্টেপ #১: আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কে খুঁজে বের করুন
শুরুতেই আপনাকে যা করতে হবে, লিড ম্যাগনেট তৈরি করার আগে, সেটি হল আপনার লিড ম্যাগনেট টি কার জন্য তৈরি করছেন, তা সঠিকভাবে বের করা।
এর সবচেয়ে ভালো উপায় হল, নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া। কাজেই, আপনার নোটপ্যাডে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখে ফেলুন, এর উত্তর গুলো লিখলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার বায়ার পার্সোনা:
১। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কি ছেলে না মেয়ে? নাকি উভয়ই?
২। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের বয়সের সীমা কেমন? (টেকনোলজিক্যাল প্রোডাক্টের জন্য ২০-৫০, জামাকাপড়ের জন্য ২০-২৫, ৪০-55 এমন হতে পারে)
৩। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের আয় কেমন? (উচ্চবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত)
৪। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কি কোন নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রির? নাকি তারা সাধারণ মানুষ?
৫। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের লক্ষ্য কী? আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কি কোনোভাবে এই লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করছে?
৬। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কোন পেইন পয়েন্ট কি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মাধ্যমে সমাধান হচ্ছে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি আপনার কাছে থাকে, তবে আপনি মোটামুটি ভালোভাবেই বুঝে ফেলবেন আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কে। লিড ম্যাগনেট লেখার সময়ে, আপনি তখন ওই নির্দিষ্ট অডিয়েন্স কে ফোকাস করে কাজ করতে পারবেন।
যদি না জানেন, তবে আপনি বেশ কিছু জিনিসের সাহায্য নিতে পারেন। যেমন, কাস্টোমার সার্ভে, প্রসপেক্ট সার্ভে, সোশ্যাল মিডিয়া, কিংবা গুগল অ্যানালিটিক্স। আপনি যদি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স নিয়ে অন্তত উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর না জানেন, তবে আপনার অবশ্যই কোন প্রোফেশনাল কনসালটেন্টের থেকে কনসাল্টেশন নিয়ে এরপরে আগানো উত্তম হবে।
স্টেপ #২: লিড ম্যাগনেটের ভ্যালু প্রোপোজিশন তৈরি করুন
আপনার স্টেপ এর নাম শুনে খানিকটা কঠিন মনে হতেই পারে বিষয়টাকে, কিন্তু বিষয়টা আসলে বেশ সহজ। আপনার শুধু নিজেকে এই প্রশ্নটি করতে হবে, “আমার লিড ম্যাগনেট অন্য একজন মানুষ কেন ডাউনলোড করবে? কেন সে আমাকে তার ফোন নাম্বার কিংবা ইমেইল অ্যাড্রেস দেবে?”
এর উত্তরে, আপনাকে অবশ্যই খুবই উপকারী কিছু দিতে হবে। আপনি যদি ডিসকাউন্ট দেন, তবে এই ভ্যালু প্রোপোজিশন বেশ সহজ। আপনাকে ইমেইল কিংবা ফোন নাম্বার দিয়ে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কিছু পরিমাণে টাকা বাঁচাতে পারছে।
যদি ডিসকাউন্ট না দেন, তবে আপনার মার্কেটিং এ, এবং আপনার লিড ম্যাগনেটেও খুবই পরিষ্কার একটি ভ্যালু থাকতে হবে, যে ভ্যালু টা আপনার টার্গেট অডিয়েন্স পাবে আপনাকে ইমেইল দেয়ার পরিবর্তে।
আপনার লিড ম্যাগনেট এর হেডলাইন এ, এই ভ্যালু প্রোপোজিশন আপনি যদি বুঝিয়ে দিতে পারেন, তবে আপনার প্রসপেক্ট অর্ধেক রাজি এই লিড ম্যাগনেট দেখেই হয়ে যাবে! আমরা কিছু উদাহরণ দিচ্ছি এখানে আপনার বোঝার এবং চিন্তা করার সুবিধার জন্য:
ইবুক এবং হোয়াইটপেপার
- ১০ টি পয়েন্টে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর রহস্য
- ই-কমার্স ব্যবসায় শুরু করার স্টেপ বাই স্টেপ প্ল্যান
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
টেমপ্লেট এবং চেকলিস্ট
- কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার টেমপ্লেট
- ইমেইল মার্কেটিং চেকলিস্ট
- সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট স্ক্রিপ্ট
ফ্রি ট্রেনিং বা কনসাল্টেশন
- বিনামূল্যে মার্কেটিং কনসাল্টেশন
- ই-কমার্স সফলতার রহস্য
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ওয়েবিনার
এবার, এর সঙ্গে মিলিয়ে কিছু ডেসক্রিপশন লিখে ফেলুন, যা আপনি আপনার লিড ম্যাগনেটের প্রোমোশন এ ব্যবহার করতে পারবেন! তাহলেই আপনার এ ধাপ কমপ্লিট হয়ে যাবে।
স্টেপ #৩: লিড ম্যাগনেটটি তৈরি করুন
এবার, ফাইনালি, লিড ম্যাগনেট টা বানাতে হবে আমাদেরকে। লিড ম্যাগনেট বানানোর ক্ষেত্রে, আমরা তিনটি ধাপ ফলো করি সাধারণত। নিচে, তিনটি ধাপ দেখে নেই চলুন:
কন্টেন্ট লেখা
১। আউটলাইন তৈরি
লেখা শুরু করার আগে, যে স্পেসিফিক টপিক নিয়ে লিখতে চাচ্ছেন, কিংবা ভিডিও বানাতে চাচ্ছেন, সেই টপিক এর একটি পরিষ্কার আউটলাইন তৈরি করতে হবে। এতে আপনি নিজেও লিড ম্যাগনেট বানানোর সময়ে গুছিয়ে কাজ করতে পারবেন, এবং আপনার টার্গেট অডিয়েন্সও উপকৃত হবে।
২। রিসার্চ এবং ইনফরমেশন
রিসার্চ করা যেকোন ভালো কাজেরই পূর্বশর্ত। কোয়ালিটি দিতে চাইলে, আপনাকে অবশ্যই রিসার্চ করতে হবে এবং যত রেলেভ্যান্ট ইনফরমেশন আছে, সেগুলো জড়ো করতে হবে। আপনি যদি এসব সোর্স আপনার লিড ম্যাগনেট এ দিয়ে ফেলতে পারেন, তবে আপনার কাজের ক্রেডিবিলিটি আরও বেড়ে যাবে।
৩। স্ক্রিপ্ট কিংবা লিড ম্যাগনেট লেখা
এবার, আপনাকে লিখে ফেলতে হবে। যদি ভিডিও লিড ম্যাগনেট বানাতে চান, তবে ভিডিও স্ক্রিপ্ট তৈরি করে, ভিডিও শুট করে ফেলবেন। আর যদি ইবুক হয়, তবে সোজাসুজি লিখে ফেলবেন।
আপনার লেখা অবশ্যই এনগেজিং হতে হবে, এবং সহজ ভাষায় লিখতে হবে যেন যে পড়ছে তার কষ্ট না হয়। বেশি টেকনিক্যাল শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ আপনার লেখা যিনি পড়ছেন তিনি টেকনিক্যাল শব্দ নাও জানতে পারেন। হেডিং, সাবহেডিং এবং বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করতে পারেন আপনার লেখা আরও সাজানোর জন্য।
৪। প্রুফরিড এবং এডিট
আপনার লেখা অবশ্যই দক্ষ কাউকে দিয়ে প্রুফরিড করিয়ে নিতে হবে। লেখায় গ্রামার কিংবা বানানে ভুল কোনোভাবেই থাকা যাবে না।
লেআউট ডিজাইন (আপনার প্ল্যান করা লিড ম্যাগনেট টি ইবুক হলে)
১। হোয়াইট স্পেস
আপনার লেখায় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে হোয়াইট স্পেস ব্যবহার করতে হবে। তাহলে, লেখা পড়তে সহজ হবে এবং লিড ম্যাগনেটটি দেখতেও সুন্দর দেখাবে।
২। টাইপোগ্রাফি
আপনার লিড ম্যাগনেটে, আকর্ষণীয় ফন্ট ব্যবহার করতে হবে। সাধারণ অতিব্যবহৃত ফন্ট ব্যবহার না করাই ভালো।
৩। ভিজুয়াল
হাই কোয়ালিটি ছবি কিংবা গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে, মার্কেটপ্লেস থেকে কিছু গ্রাফিক্স কিনে দিতে পারেন।
ব্র্যান্ডিং
১। আপনার লিড ম্যাগনেট এ অবশ্যই আপনার ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি ফুটিয়ে তুলতে হবে। আপনার ব্র্যান্ডের লোগো, রং, সবকিছু লিড ম্যাগনেট এ ফুটিয়ে তুলতে হবে। এটা না হলে, আপনার টার্গেট অডিয়েন্স লিড ম্যাগনেট এর সঙ্গে আপনাকে কানেক্ট করতে পারবে না।
২। কনসিস্টেন্সি রাখতে হবে। আপনার লিড ম্যাগনেটের প্রতি পেইজে মোটামুটি একই রকম ডিজাইন থাকলে, সেটা মনোযোগ ধরে রাখার জন্য ভালো কাজ করে। যদি প্রতি পেইজে নতুন নতুন ডিজাইন থাকে, তা আপনার জন্য ভালো তো হবেই না, বরং খারাপও হতে পারে। কাজেই, আপনার লিড ম্যাগনেটের প্রতি পেইজের ডিজাইন, এবং এক লিড ম্যাগনেটের সাথে অন্য লিড ম্যাগনেটে কনসিস্টেন্সির মিল থাকতে হবে।
স্টেপ #৪: ল্যান্ডিং পেইজ তৈরি করুন
এবার, আপনার লিড ম্যাগনেট তৈরি হয়ে গেলে, আপনাকে ল্যান্ডিং পেইজে ফোকাস দিতে হবে। আপনার লিড ম্যাগনেট টা চমৎকার হতেই পারে, কিন্তু একইসাথে যদি আপনার ল্যান্ডিং পেইজ, বা যেখান থেকে মানুষ লিড ম্যাগনেট ডাউনলোড করবে, সেটা ভালো না হয়, তবে আপনি কোনোভাবেই সফল হতে পারবেন না।
আপনি যদি লিড অ্যাডস রান করতে চান, তবে এই সেকশন আপনার জন্য না। আপনি যদি লিড অ্যাডস রান করতে না চান, তবে চলুন আমরা জেনে নেই ল্যান্ডিং পেইজের বিস্তারিত:
ভালো হেডলাইন এবং কপি বা কন্টেন্ট
১। আপনার ল্যান্ডিং পেইজের হেডলাইন এবং কপি হতে হবে ক্লিয়ার এবং ছোট। আপনার অডিয়েন্স যেন এক দেখাতেই এই লিড ম্যাগনেটের উপকারিতা বুঝে ফেলতে পারে।
২। এই লিড ম্যাগনেট টা ডাউনলোড করলে অডিয়েন্সের কী কী উপকার হতে পারে, তা লিস্ট করুন। এই লিস্ট টা দিয়ে আপনি কিছু ভালো হেডলাইন টেস্ট করতে পারবেন। এই লিস্ট ব্যবহার করে কপি বা কন্টেন্টও লিখতে পারবেন ল্যান্ডিং পেইজের জন্য।
৩। হেডলাইনে কিছু অ্যাকশন টার্ম ব্যবহার করতে পারেন, যেমন, "ডিসকভার", "লার্ন", "ডাউনলোড", "ক্লেইম"।
ভালো সিটিএ (কল টু অ্যাকশন)
সিটিএ, বা কল টু অ্যাকশন হচ্ছে এমন একটি বাটন, যা ক্লিক করে মানুষ ফর্ম সাবমিট করবে, বা লিড ম্যাগনেটটি ডাউনলোড করবে। যেহেতু এই বাটন টি ল্যান্ডিং পেইজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কাজেই এখানে বেশ ফোকাস দেয়া দরকার। আমরা এই পয়েন্টে কিছু জেনারেল ডিরেকশন নিয়ে আলোচনা করব।
১। সিটিএ তে অবশ্যই অ্যাকশন টার্ম ব্যবহার করতে হবে। সিটিএ এর অ্যাকশন টার্ম নিয়ে প্রয়োজনে কিছু রিসার্চ করে নিতে পারেন।
২। সিটিএ বাটন এর প্লেসমেন্ট এর বিষয়ে কেয়ারফুল থাকতে হবে। সাধারণত, সব ল্যান্ডিং পেইজ এই পাঁচ থেকে ছয়বার সিটিএ দেয়া থাকে। আপনিও মোটামুটি এরকম সংখ্যক বার ল্যান্ডিং পেইজে সিটিএ ব্যবহার করতে পারেন।
৩। আপনার ল্যান্ডিং পেইজ এর যে রং থাকবে, সিটিএ এর রং সেই রং কে কমপ্লিমেন্ট করতে হবে। যদি একই কিংবা কাছাকাছি রং হয়, তবে এটা ল্যান্ডিং পেইজের সঙ্গে মিশে যেতে পারে, তাহলে দেখা যাবে আপনার অডিয়েন্স সিটিএ দেখতেই পাচ্ছে না।
ফর্ম ফিল্ড
আপনি যেখানে ইনফরমেশন নিয়ে আপনার অডিয়েন্স কে লিড ম্যাগনেট টা দিবেন, সেটাই ফর্ম। এই ফর্ম সাধারণত ওয়েবসাইটে থাকবে, যেইখানে ইনফরমেশন সাবমিট করার পরে ফিরতি মেইলে, কিংবা রিডাইরেকশনের মাধ্যমে তাকে লিড ম্যাগনেট দিয়ে দেয়া হবে।
ফর্মে খুব বেশি ফিল্ড না থাকাই ভালো। হাবস্পট এর মত বড় ইনবাউন্ড মার্কেটিং কোম্পানি, শুধুমাত্র ইমেইল নিয়েই লিড ম্যাগনেট দিয়ে দেয়। আপনি চাইলে ইমেইলের সঙ্গে, ফার্স্ট এবং লাস্ট নেম, বড়জোর ফোন নাম্বার নিতে পারেন।
আপনার বিজনেস যদি অফলাইনে বেশি পরিচালিত হয়, তবে শুধু ফার্স্ট নেইম আর ফোন নাম্বার নিলেও চলে। আপনি লিড ফর্মে যত বেশি ইনফরমেশন চাবেন, মানুষ আপনার ফর্ম ফিলাপ করবে তত কম।
সোশ্যাল প্রুফ, আর টেস্টিমনিয়াল
মানুষ অন্য মানুষের রিভিউ, কিংবা রিয়্যাকশন দেখতে পছন্দ করে। মডার্ন বিজনেস গুলো সবসময়ই এই কাজটা করে এসেছে। আপনি যেকোন বিজনেস ওয়েবসাইটে গেলেই এখন রিভিউ কিংবা টেস্টিমনিয়াল দেখতে পারবেন। আপনার ল্যান্ডিং পেইজেও এরকম রিভিউ কিংবা টেস্টিমনিয়াল দিতে পারেন।
স্টেপ #৫: যেসব লিড পাবেন, তাদেরকে নার্চার করুন
লিড নার্চার হল আপনার লিড দের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা, যেন তারা আস্তে আস্তে আপনাকেই একমাত্র অপশন হিসেবে বিবেচনা করে। লিড নার্চারের জন্য আপনাকে ভালো কন্টেন্ট দিতে হবে, এবং তাদেরকে সাহায্য করতে হবে তাদের নিজেদের বিজনেস ডিসিশন নেয়ার জন্য।
হাবস্পটের একটি রিপোর্টে হাবস্পট বলেছে যে লিড নার্চারিং এর মধ্যে দিয়ে যেসব লিড যায়, তারা ৭৯% বেশি সময় আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনবে।
সেলসফোর্স অন্য একটি রিপোর্টে বলেছে যে নার্চার করা লিড রা গড়ে ২০% বেশি খরচ করে আপনার বিজনেস এ, নার্চার না করা লিড দের তুলনায়।
লিড নার্চার আপনি দুই ভাবে করতে পারেন - ইমেইল এবং ফ্রি ট্রেনিং।
যদি আপনার কাস্টোমার বেজ বিদেশি হয়, তবে ইমেইল একটি বেশ ভালো অপশন। যদি কাস্টোমার বেজ দেশি হয়, তবে ট্রেনিং বেশি কাজে আসবে। চলুন আমরা অনলাইন ট্রেনিং এর কিছু স্ট্র্যাটেজি দেখে নেই:
- ওয়েবিনার বা অনলাইন কোর্স ইদানীং বেশ জনপ্রিয়। আপনি চাইলে এমন একটি কোর্স তৈরি করে রেখে দিতে পারেন। আপনি যে দক্ষ, এই বিষয়টা প্রচার করতে ওয়েবিনারের ভূমিকা অনেক বেশি।
- আপনার লোকাল অডিয়েন্সের জন্য লাইভ ওয়ার্কশপ কিংবা সেমিনার অ্যারেঞ্জ করতে পারেন।
- ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারেন। ইউটিউব নার্চারিং এর পাশাপাশি নতুন প্রসপেক্ট নিয়ে আসতেও সাহায্য করবে।
- ওয়ান অন ওয়ান কনসাল্টেশন করতে পারেন, যেখান আপনি সামনাসামনি কিংবা ভিডিও কল এ কাউকে ফ্রিতে কনসাল্ট করবেন।
এসব পদ্ধতি আপনার সম্পূর্ণ বিজনেস কেই একটি বড় বুস্ট দিয়ে দিতে পারে!
স্টেপ #৬: আপনার ফানেল এর প্রোমোশন করুন
এবার সবচেয়ে বড় কাজ, আপনার ফানেল এর প্রোমোশন। এটা আপনি দুইভাবে করতে পারেন। ফ্রি তে, কিংবা পেইড।
ফ্রি ফানেল প্রোমোশন
ফ্রি ফানেল প্রোমোশনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যানেল বাংলাদেশে দুইটি। চলুন সেগুলো দেখে নিই:
ইউটিউব
ইউটিউব বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে কার্যকরী মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম। শুধু বাংলাদেশে না, সারা পৃথিবীর জন্যই ইউটিউবের কোন বিকল্পই নেই। আপনি আপনার বিজনেসের সঙ্গে রিলেটেড বিভিন্ন বিষয়ের ওপরে ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করতে পারেন, এবং ভিডিওর শেষে আপনার লিড ম্যাগনেট কে প্রোমোট করতে পারেন। এই লিড ম্যাগনেট যে কেউ ডাউনলোড করলেই তাকে আপনি আপনার মার্কেটিং ফানেল এ নিয়ে যেতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া
সোশ্যাল মিডিয়া বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার বাংলাদেশে অনেক বেশি। দেখা যায় স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মোটামুটি সকলেই পরিচিত সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে। এই সোশ্যাল মিডিয়া আপনি নিজেও হয়তো ব্যবহার করেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার পেইজ বা প্রোফাইলে আপনার ল্যান্ডিং পেইজ এর প্রোমোশন করতে পারেন। শেয়ার করতে পারেন, কিংবা বিভিন্ন গ্রুপে কমেন্ট করে আপনার কমিউনিটি এবং টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন।
পেইড ফানেল প্রোমোশন
পেইড ফানেল প্রোমোশন, কিংবা অ্যাড একটু খরচসাপেক্ষ হতে পারে, কিন্তু পেইড মাধ্যম গুলোয় আপনি একেবারে অচেনা মানুষের কাছে খুব সহজে আপনার লিড ম্যাগনেট কে পৌঁছে দিতে পারবেন, যেটা যেকোন ফ্রি মাধ্যমে করা বেশ কঠিন।
অ্যাডভার্টাইজমেন্টের মাধ্যমে, আপনি রিটার্গেট করতে পারবেন, যিনি আপনার লিড ম্যাগনেট ডাউনলোড করেছেন, তাকে নতুন করে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য অ্যাড দিতে পারবেন। কিংবা, আপনি এ/বি টেস্টিং করতে পারবেন যেখানে আপনি বিভিন্ন অ্যাড এর ভার্সন নিয়ে টেস্ট করতে পারবেন।
স্টেপ #৭: রিপোর্টিং এবং অপটিমাইজেশন
আপনি ফানেল বানাচ্ছেন, ফানেল প্রোমোট ও করছেন, কিন্তু এটা বুঝবেন কিভাবে যে আপনি নির্দিষ্ট কয়জন এর কাছে পৌঁছেছেন? কয়জন আপনার লিড ম্যাগনেট নামিয়েছে, এবং আপনার এই কনভার্শন রেট কি কম না বেশি?
এটা বোঝার জন্য আপনার প্রয়োজন রিপোর্টিং, এবং ডাটা ম্যানেজমেন্ট টুল।
এই কাজের জন্য, পৃথিবীতে সবচেয়ে সেরা টুল হল হাবস্পট।
হাবস্পটে আপনি লিড ম্যাগনেট প্রোমোট করতে পারবেন, অ্যাড রান করতে পারবেন, আপনার অ্যাড এ কে ক্লিক করল তার নাম-ইমেইল দেখতে পাবেন। আপনি লিড ম্যাগনেট পাঠাতে পারবেন ফিরতি ইমেইলে, এবং সে কি লিড ম্যাগনেট ডাউনলোড করল কি না এই ডাটা দেখতে পারবেন।
একইসঙ্গে, দেখতে পারবেন তারা আপনার ওয়েবসাইটে কোন কোন পেইজ ভিজিট করেছে, কবে ভিজিট করেছে। আপনি পরবর্তীতে নার্চারও করতে পারবেন হাবস্পট ব্যবহার করে, এমনকি প্রোডাক্ট ও বিক্রি করতে পারবেন হাবস্পট ব্যবহার করে।
হাবস্পটে, আপনাকে তিনটা মেট্রিকের দিকে নজর রাখতে হবে:
- ল্যান্ডিং পেজ কনভার্শন রেট (কয়জন মানুষ আপনার পেজ দেখছে, এবং এদের মধ্যে কয়জন লিড ম্যাগনেট ডাউনলোড করছে)
- ইমেইল ওপেন রেট এবং ক্লিক রেট
- লিড টু কাস্টোমার কনভার্শন রেট
এই ডাটা গুলো দেখে, আপনি ডিসিশন নিতে পারবেন যে আপনার ল্যান্ডিং পেইজের কোথায় আপনাকে ফোকাস করতে হবে, এবং হয়তো নতুন করে ডিজাইন করতে হবে।
সবকিছুর পরে, আপনার বিজনেস পেয়ে গেল বিশাল একটি বুস্ট!
সবশেষে
একটি লিড ম্যাগনেট ফানেল আপনার সম্পূর্ণ ব্যবসায়ের গতি বদলে দিতে পারে। কাজেই, এখানে আপনাকে বেশ ফোকাস দিতে হবে। এই ব্লগ ভালোমত পড়ে থাকলে, আপনি কাজটি সফলভাবে করতে পারবেন!
তবে, আপনি নিজে করতে না চাইলে, আমাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেন!
হাবএক্সপার্ট একটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং ইনবাউন্ড মার্কেটিং এজেন্সি, এবং আমরা প্রতি মাসেই বেশ কিছু বড় ইনবাউন্ড প্রোজেক্ট এ কাজ করে থাকি, যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের রেভেনিউ অপারেশনসের সমস্ত সমস্যার সমাধান পেয়ে যায় আমাদের থেকে।
আপনার প্রোজেক্ট যত ছোটই হোক না কেন, হাবএক্সপার্ট আপনাকে ডেডিকেটেড প্রোজেক্ট ম্যানেজার দিবে, যিনি আপনার কাজকেই দেবে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি!
এবং, হ্যাঁ, আমাদেরও রয়েছে ফ্রি কনসাল্টেশন!
নিচের বাটনে ক্লিক করে নিয়ে নিন আপনার মার্কেটিং এর কনসাল্টেশন, একদম বিনামূল্যে!